বিয়ে; আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ামাত।

#আলহামদুলিল্লাহ! আমার বিয়ের আজ ৩০ দিন পূর্ণ হলো।

গত ১ মাস  আগে আমার বিয়ে হয়েছে।যদিও ওর (এইচ.এম.ইয়াসিন আরাফাত রাজু)  ইচ্ছে ছিল লিপইয়ারে বিয়ে করবে অর্থাৎ আগামী বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং এ,এতে আমারো কোনো আপত্তি ছিল না,কারণ ও আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড,ওর ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা মনে করি,কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় এই বছর ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় সেটাও আবার দুই পরিবারের হটাৎ সিদ্ধান্তে,গত ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ দুপুরে ওদের বাড়ি থেকে আমাকে দেখতে আসে এবং মাত্র ৮ দিনের মধ্যে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।তাড়াহুড়ার একমাত্র কারণ আমরা ১০ বছর যাবত একসাথে লেখাপড়া করি, আমাদের পোষ্ট গ্রাজুয়েশন শেষ হয়ে গেছে এখন দুইজন যেন একসাথে এ্যাব্রড পিএইচডি করতে যেতে পারি।

#আমাকে অফিসিয়ালি ওদের বাড়ি থেকে দেখতে এসে বই (২২ খন্ডের তাফসীরে ফি ঝিলালিল কুরআন) উপহার দিয়েছিল,যা আমার খুবই পছন্দ,কনে দেখতে এসে হাতে টাকা দেওয়া আমাদের সমাজের এই প্রচলন আমার একেবারেই অপছন্দ,যদিও আমি কখনো ওকে বলি নি আমাকে বই দিতে কিন্তু আমি বই পছন্দ করি তাই সে বই পাঠিয়েছে এবং তার সব থেকে পছন্দের তাফসীর যেটা সেটাই।

#যেহেতু আমাদের ১০ বছরের বন্ধুত্বের পর বিয়ে আর ও মাত্রই পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে এখনো কোনো জবে প্রবেশ করে নি,তাই দেনমোহরের ব্যাপারটা আমরা দুইজন ই ঠিক করেছি।বিয়ের কয়দিন আগে বাবা-মা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আমি দেনমোহর কত চাই? আমি বললাম আমরা দুজন মিলে ৫৫,৫৫৫/- (পঞ্চান্ন হাজার পাঁচ্শত পঞ্চান্ন টাকা) টাকা ঠিক করেছি,বাবা-মা অন্য সকল বাবা-মায়ের মতোই অবাক হয়েছিল কিন্তু আমরা ঠিক কিরেছি বিধায় আর কথা বাড়ায় নি।বিয়েতে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই কম বেশি দেনমোহরের এমাউন্টে অবাক হয়েছিলেন যে এত কম দেনমোহর ও হয় নাকি! আবার সোনার গহনা ছাড়াও বিয়ে হয় নাকি! আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে গিয়েছে যে দেনমোহরের এ্যামাউন্ট,সোনার গহনা এসবের উপর সামাজিক স্ট্যাটাস ডিপেন্ড করে।বরকে প্রেশার দিয়ে এগুলা আদায় করা হয়,এদিকে বরের অবস্থা যে কাহিল হয় তার খবর কেউ রাখে না।আমি সব সময় দেখছি কনের বাবা-মা দেনমোহর বাড়াইতে চায় আর বরের বাবা-মা দেনমোহর কমাইতে চায়।এগুলা নিয়ে ঝামেলা হয় একটা পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের মত অবস্থা তৈরি হয়।আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়,একজন আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন সুশিক্ষিতা মেয়ের দেনমোহর নিয়ে বারাবাড়ি করা একেবারেই  উচিতই নয়,বরং না নেওয়াই উচিৎ কিন্তু যেহেতু ইসলামে দেনমোহর অপরিহার্য তাই বর সাধ্য অনুযায়ী নগদ যা দেয় তাই কবুল করা উচিত।

#আমাদের ইচ্ছা ছিল মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করার, সে মসজিদে আর আমি বাড়িতে,আলহামদুলিল্লাহ মসজিদেই কবুল হয়েছে! সাথে ওর একটাই কথা ছিল বিয়েতে কোন মেকআপ তো করা যাবেই না সাথে আমি যেমন পর্দা করি অমন বোরকা পরে পর্দা করেই যেন বিয়ে হয়।তাই সে বিয়েতে শাড়ির সাথে বোরকাও দিয়েছিল।যদিও আমি মেকআপ করি না পর্দা মেইনটেইন করে চলি তাই আমার জন্য আরো অধিক আনন্দের ছিল ব্যাপার টা।

 আরাফাত ❤️ মিম

وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖۤ اَنۡ خَلَقَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا لِّتَسۡکُنُوۡۤا اِلَیۡهَا وَ جَعَلَ بَیۡنَکُمۡ مَّوَدَّۃً وَّ رَحۡمَۃً ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ 

#আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জোড়া; যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং সৃজন করেছেন পারস্পরিক ভালবাসা ও সহমর্মিতা। নিশ্চয় এতে বহু নিদর্শন রয়েছে সে সম্প্রদায়ের জন্য, যারা তা চিন্তা করে।

[সূরা : আর রুম : আয়াত : ২১]


#আমাদের জন্য দোয়া করবেন,যেন আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালনা করেন!


মাকসুদা আকতার মিম

বগুড়া,বাংলাদেশ 

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

ইউরোপ-আমেরিকা'য় স্বপ্ন বিসর্জন

চোখ খুলুন। সাবধান হোন। প্রযুক্তির দাস নয়, নিয়ন্ত্রক হন