স্যাকারিন আবিষ্কারের চিত্তাকর্ষক কাহিনী
১৮৭৯ সাল - ল্যাবরেটরিতে কাজ করছিলেন রুশ বিজ্ঞানি কনস্টানটিং ফালবার্গ। এ সময় অজ্ঞাতেই তার হাতে মেখে যায় কিছু রাসায়নিক দ্রব্য। এগুলো তিনি খেয়ালই করেননি।
কাজ করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। ডিনারের কথা তার মনেই ছিল না। রাত অনেক গভীর হলে মনে পড়ে ডিনারের কথা। তৎক্ষণাৎ এক টুকরো রুটি নিয়ে তাতে কামড় বসান।
কিন্তু মুখে দিয়েই অবাক তিনি! রুটি বেশ মিষ্টি লাগছিল। কেন...? উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেন। রুটিতে চিনি ছিল না এটা নিশ্চিত। পরে হাত মুখে দিয়ে বুঝতে পারেন মিষ্টির উৎস হলো হাত।অর্থাৎ হাতে লেগে থাকা অজ্ঞাত কেমিক্যাল।
কী কী নিয়ে কাজ করছিলেন,সেগুলো ভালো করে যাচাই করার পর ফালবার্গ অবশেষে আবিষ্কার করে ফেললেন পৃথিবীর কৃত্রিম সুইটনার। পরে এর পেটেন্ট রাইটও নিয়ে নেন নিজের নামে। অচিরেই স্যাকারিন চিনির বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
স্যাকারিন একটি মিষ্টি জৈব পদার্থ। এটি চিনির চেয়ে প্রায় ৫০০ গুন বেশি মিষ্টি। এটি ডায়াবেটিস রোগীকে খেতে দেয়া হয়। স্যাকারিনের খাদ্যগুণ নেই। স্যাকারিন তৈরি হয় আলকাতরার পাতনের পর প্রাপ্ত উলুইন নামক পদার্থ থেকে। স্যাকারিন বিষাক্ত না। তবে এটি খাদ্যে না মিলানোই উত্তম। এটি খেলে তেমন ক্ষতি দেখা যায় না।
স্যাকারিন চিনির চেয়ে ২০০ থেকে ৭০০ গুণ মিষ্টি হলেও এর কোন পুষ্টিগুণ নেই অর্থাৎ স্যাকারিন শরীরে কোন পুষ্টি বা ক্যালরি সরবরাহ করেনা। যেভাবে শরীরে প্রবেশ করে ঠিক অনুরূপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায় অর্থাৎ শরীরের ভেতরে কোন রকম রাসায়নিক রূপান্তর বা মেটাবোলিজমে সে অংশগ্রহণ করে না।
FDA "Food and Drug Administration" স্যাকারিনের প্রতিদিনের গ্রহণযোগ্য মাত্রা "Acceptable Daily Intake /ADI" শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে আর তা হল ৫ মিলি গ্রাম।
সূত্র: ব্রিটানিকা
Comments
Post a Comment