এপ্রিলের আকাশে মহাজাগতিক আয়োজন
নিশুতি আকাশে তাকালেই যেন সময় থেমে যায়। এপ্রিলের এই সন্ধ্যা ও রাতগুলোয় একের পর এক মহাজাগতিক আয়োজন, যেন আমাদের চোখ তুলে তাকাতেই ডাকছে। চলুন এবার একসাথে দেখে নেওয়া যাক, এই মাসের কোন কোন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক মুহূর্তে চোখ রাখা যায়—
৫ এপ্রিল:
চাঁদ তার প্রথম চতুর্থাংশে পৌঁছাবে। মানে অর্ধচন্দ্র — ঠিক মাঝখান দিয়ে কাটা, কিন্তু একপাশ ঝলমল করছে। মজার ব্যাপার হলো, এই সময় চাঁদের গর্ত আর পাহাড়গুলো সবচেয়ে স্পষ্ট দেখা যায়। মিথুন নক্ষত্রমণ্ডলের ভেতর চাঁদ ও মঙ্গল একসাথে দেখা যাবে — যেন আকাশে দুটি পুরনো বন্ধু পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে।
১৩ এপ্রিল:
পূর্ণিমা, আর এই পূর্ণিমা এক বিশেষ নামও পেয়েছে — “পিংক মুন”। যদিও গোলাপি হবে না চাঁদ, নামটা এসেছে বসন্তের এক গোলাপি ফুল থেকে। তবে পূর্ণ চাঁদের সেই উজ্জ্বল গোলাকৃতি সৌন্দর্য তো কোন নামেই আটকে রাখা যায় না।
১৭ এপ্রিল:
এদিন সূর্যোদয়ের ঠিক আগে দক্ষিণ আকাশে চোখ রাখলে আপনি দেখতে পাবেন, শুক্র, শনি, বুধ আর নেপচুন এক সরলরেখায় দাঁড়িয়ে। যদিও বাস্তবে তারা তেমনভাবে সারিবদ্ধ না, তবে পৃথিবী থেকে দেখলে এই লাইনআপ এক কথায় অসাধারণ।
২১ এপ্রিল:
বুধ গ্রহ পৌঁছাবে তার সর্বোচ্চ পূর্বমুখী অবস্থানে। ফলে সন্ধ্যার সময় পশ্চিম আকাশে সে উজ্জ্বলভাবে দেখা যাবে। ০.৬ ম্যাগনিটিউডে ঝলসে উঠবে সে — যেন ক্ষণিকের এক আগন্তুক।
২২-২৩ এপ্রিল:
এই দু’রাতে লাইরিড উল্কাবৃষ্টি চূড়ায় থাকবে। প্রতি ঘণ্টায় দেখা যেতে পারে প্রায় ১৮টি উল্কা। রাতের আকাশে উজ্জ্বল রেখার মতো পড়ে যাবে তারা — যেন মহাকাশ কারও মনের কথা লিখে দিচ্ছে আলোর আঁচড়ে। অন্ধকার, খোলা ও উঁচু জায়গা বেছে নিন, অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত হবে।
২৫ এপ্রিল:
চাঁদ এবার আসবে শুক্র, বুধ, শনি ও নেপচুন-এর কাছাকাছি। এই গ্রহদের একসাথে একত্রে দেখা যাবে সন্ধ্যার পর পশ্চিম আকাশে — যেন আকাশে একদল নীরব দর্শনার্থী।
২৭ এপ্রিল:
শুক্র গ্রহ উঠবে তার সবচেয়ে উজ্জ্বল রূপে — প্রায় -৪.৮ ম্যাগনিটিউড! আবার এইদিনই নতুন চাঁদ, তাই আকাশ থাকবে আরও অন্ধকার, ফলে শুক্রের আলো যেন চোখে স-traight আগুন লাগায়।
২৯ এপ্রিল:
এই রাতে আকাশ হয়ে উঠবে যেন এক মহাজাগতিক প্রদর্শনী। চাঁদ, বৃহস্পতি, শুক্র আর মঙ্গল একই রেখায়। কাছেই থাকবে আলদেবারান, প্লিয়াডিস তারকাগুচ্ছ, আর ইউরেনাস। সব মিলিয়ে এক অপূর্ব সমাবেশ — সূর্য ডোবার পর পশ্চিম আকাশে চোখ রাখলেই দেখতে পাবেন।
© অভ্র
Comments
Post a Comment